চার মাসের কাজ মাত্র এক-দেড় মাস করার পর খোঁজ মিলছে না ঠিকাদারের। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি গা ঢাকা দেওয়ায় সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এতে রাস্তা চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণকে। অবিলম্বে নতুন ঠিকাদার নিয়োগ করে দ্রুত কাজ শেষ করার দাবী জানিয়েছে এলাকাবাসী।
তেরখাদা-উপজেলা সদর-নাচুনিয়ার সাড়ে সাত কি.মি রাস্তা সংস্কার ও মেরামতের কাজ ফেলে লাপাত্তা ঠিকাদার।রাস্তাজুড়ে খানাখন্দ ও অসংখ্য ছোট-বড়, উচু-নিচু গর্তের কারণে মানুষ চলাচলে পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে। উপজেলা সদরের গুরুত্বপূর্ণ এ রাস্তা দিয়ে উপজেলা পরিষদের সরকারি সকল দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারি, স্কুল-কলেজ ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, হাসপাতাল ও উপজেলা সদরে আসা লোকজনকে অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। জরুরি রোগীদের হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুর্ভোগের সীমা থাকে না। অভিযোগ ঠিকাদার ও সড়ক বিভাগের গাফিলতির কারণেই পথচারী লক্ষাধিক মানুষ ও যানবাহন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে এ রাস্তাটি সংস্কার না করায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়। এ পরিস্থিতিতে রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। খানাখন্দ সংস্কার করে রাস্তা কার্পেটিং করার জন্য বরাদ্দ হয় ২ কোটি ২৫ লাখ ৬৯ হাজার টাকা। কাজের দরপত্র পান মেসার্স আর.এস. ট্রেডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে তারা কাজ শুরু করে। বেশ কিছুদিন ধরে রাস্তা খুঁড়ে ইটের খোয়া ফেলার পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন কাজ ফেলে চলে যান। গত ২০২৪ সালের ৩ এপ্রিল কাজটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। সেই সময়সীমা শেষ হওয়ার প্রায় ১ বছর পেরিয়ে গেলেও বাকি কাজ শেষ করার উদ্যোগ নেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের।
সরেজমিনে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছিল। একপর্যায়ে রাস্তাটি সংস্কারের কাজ শুরু হলেও গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই গা ঢাকা দেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী।
পথচারী অনিক শিকদার, জহির উদ্দিন, আরমান খাঁনসহ বেশ কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, রাস্তার কাজ শুরু দেখে ভাবলাম পথচারীদের কষ্টের দিন শেষ হবে, জনদূর্ভোগ লাগব হবে। এখন দেখছি আগের ভাঙ্গাচোরা রাস্তাই ভালো ছিল। স্কুলগামী ছাত্র-ছাত্রীদের কষ্টের শেষ নেই, যাতায়াত করছে ঝুঁকিতে।
ভ্যানচালক জাহিদ বলেন, রাস্তার বেহাল দশা এলাকাবাসীর ভোগান্তিকে অসহনীয় করে তুলেছে। জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয়। ছোট ছোট ইটের খোয়ার ওপর দিয়ে ভ্যান চালাতে খুবই সমস্যা হচ্ছে। সড়ক সংস্কারে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স আর.এস. ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ সোহেলকে তার মুঠোফোনে বার বার কল দেওয়ার পরও সে রিসিভ করেনি।
উপজেলা প্রকৌশলী ভাষ্কর মৃধা বলেন, ‘চুক্তি অনুযায়ী ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে এই রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদারের কোনো খোঁজ নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। চুক্তি বাতিল করে পুনরায় দরপত্র দিয়ে কাজটি শেষ করার চেষ্টা করছি।
খুলনা গেজেট/এএজে